প্রতিবন্ধী ভাতা কি? প্রতিবন্ধী ভাতা কয় মাস পর পর দেয়: প্রতিবন্ধী ভাতা দিবে কখন, তার প্রশ্নের উত্তর জানতে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন। এছাড়াও, প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা এবং কারা এই সুবিধা পাচ্ছে, সে সম্পর্কেও এই পোস্টে বিস্তারিত তথ্য পাবেন।
২০০১ সালে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন বিল পাস করা হয়। এই আইনে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়াও, এই ভাতা পেতে প্রতিবন্ধীদেরকে সরকারি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে, ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিবন্ধী যোগ্য ব্যক্তিদেরকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।
আপনাদের যারা অবশ্যই প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে হবে, কিন্তু এখনো এটি না পেলেন, তাদেরকে অনলাইনের মাধ্যমে কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করা প্রয়োজন।
আপনি যদি বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচিত প্রতিবন্ধী হন, তবে নিশ্চিত হন যে আপনি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে ২০০১ সাল থেকে এগিয়ে এসেছে এবং এটি প্রতিমাসে নিজের তহবিল থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করছে।
বিষয়টি অবিশ্বাস্য হওয়ার কারণে, আমি আপনাদেরকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সরকারি প্রতিবন্ধীদের ভাতা প্রকাশের তথ্য দেয়ার চেষ্টা করছি, অর্থাৎ এই সময়ে সর্বমোট কতজন ভাতা পেয়েছেন তা উল্লেখ করছি।
প্রতিবন্ধী ভাতা ২০২২-২০২৩
২০২২ সালে, সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল এবং সে অনুসারে এক বছরে ২৩ লাখ ৬৫ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সরকারি ভাতা প্রদান করা হয়েছিল।
এই ভাতার সুবিধা পেতে, আপনি যদি একজন প্রতিবন্ধী হন এবং সরকারের নির্বাচিত হন, তাদের হতে অনলাইনে আবেদন করা অত্যন্ত জরুরি। আপনি সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে এখনই চালু করুন এবং আপনার অধিকার পেতে উচিত পদক্ষেপ নিন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কি? (Disability Allowance)
বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জীবনযাত্রা সহজ করার লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাহায্যার্থে এই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে স্বল্প সংখ্যক প্রতিবন্ধী এই ভাতার আওতাভুক্ত হয়েছিল। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, প্রায় ২৯ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এই ভাতার সুবিধাভোগী হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাই এই কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর ভাতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অসহায় প্রতিবন্ধীদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমেছে।
আরো জানুন,
- জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে কিভাবে? জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করার নিয়ম
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় | পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় বিক্রয় করার উপায়
- কম্পিউটারে স্ক্রিনশট কিভাবে নিতে হয় || কম্পিউটারে স্ক্রিনশট নেওয়ার নিয়ম
যদিও অনলাইনে নিজে নিজে আবেদন করতে না পারলে, স্থানীয় জনপ্রশাসন কার্যালয়ে (ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভায়) আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দেয়া যাবে। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পুনরায় অনলাইনে সেই আবেদন সাবমিট করবেন।
অনলাইনে আবেদন করার পর উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমেই ভাতার টাকা পৌঁছে যায়।
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপকের যোগ্যতা ও শর্তাবলী ২০২৪
- সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ অনুযায়ী সমাজসেবা কার্যালয় হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সে জেলা হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করবেন।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রতিবন্ধী হতে হবে।
- বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কয় মাস পর পর দেয়-
বর্তমানে সামাজিক মিডিয়া এবং গুগল ব্যবহার করে দেখা যায় যে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ জানতে চাচ্ছে কয় মাস পর পর প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়।
তাদের জন্য আমি এই সংক্ষেপে বলতে চাইছি যে প্রতিবন্ধী ভাতা সাধারিত ভাবে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রদান করা হয়। তবে অনেক সময় এটি তিন মাস পর পর দেওয়া হয় এবং এই প্রদান একটি রেজিস্টার করা ব্যক্তির নগদ, বিকাশ, রকেট এবং মোবাইল ব্যাংকিং এ হতে পারে।
গত বছরে, ২০২৩ সালে, প্রতিবন্ধী ভাতা বারবার প্রদানের চেয়ে প্রতিবন্ধীদের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার চারবার প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করেছিল।
এটি মানে হয়েছে, প্রতি তিন মাসে একবার প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়েছিল। এই বিতর্কিত সূত্র ব্যবহার করে বলা হয়েছে যে, প্রতিবন্ধী ভাতা সাধারিত ভাবে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রদান হয়।
আরো পড়ুন-
- ওয়েবসাইট কি? ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ
- ওয়ার্ডপ্রেস কি? ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম
- কিভাবে লোগো তৈরি করব? লোগো তৈরি করার নিয়ম
এছাড়া, বিশেষ করে অনেকেই এই টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেতে পারেন, যা একটি সহজ এবং কোনও উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যেতে হয়না। এই সূত্রে এসএমএস দ্বারা টাকা প্রাপ্তির প্রণালী মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে সাহায্য করতে পারে।
এই তথ্য দ্বারা আমি আশা করছি যে প্রতিবন্ধী ভাতা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিগণ এই তথ্য থেকে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন এবং আপনাদের সহায়ে আত্মনির্ভরণে অধিকার প্রাপ্ত হতে পারেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কবে দিবে ২০২৪
প্রতিবন্ধী ভাতা কবে দিবে এ বিষয়টি সম্পর্কে সমস্ত কনফিউশন থেকে মুক্তি পেতে আপনার জন্য একটি স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একবার যখন আপনি সরকারি নিয়ম রুলসের মধ্যে নির্বাচিত হন, তখন আপনি অনলাইনে নিজের লিস্ট দেখতে পারবেন, অর্থাৎ প্রতিবন্ধী লিস্ট থেকে আপনার নাম দেখতে পারবেন। এবং এই মুহূর্তে থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান হবে তিন মাসে একবার, অর্থাৎ বছরে চারবার।
এটি আপনি নগদ, বিকাশ, রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে তিন মাস পর পর প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে সক্ষম হবেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা দেয়?
- ২০২২ সালে প্রতিবন্ধী ভাতা হয়তো প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা ছিল।
- ২০২৩ সালে নতুন নীতির মুলায় প্রতিবন্ধীদের জন্য এখন মাসে প্রতি ব্যক্তি ৮৫০ টাকা পাবেন।
- ২০২৪ সালে এখনো এই নির্ধারণ একই রকম থাকতে পারে, মাসে ৮৫০ টাকা।
এই উপায়ে, প্রতিমাসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা প্রতি মাসে দেওয়া হয়েছে এবং এটি সময় থেকে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে।
কাদের প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা যাবে না?
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা – যদি আপনি সরকারি কর্মচারী হন বা সরকারি কর্মচারী হিসেবে পেনশনভোগী হন, তাহলে আপনি প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত হতে যোগ্য নয়।
এটা কারণে যে আপনি অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে বা সংস্থায় নিয়মিতভাবে আর্থিক অনুদান পান বা কোন বেসরকারি সংস্থা বা সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিতভাবে আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন, তাহলে আপনি প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত হতে যোগ্য নয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির জন্য যে সমস্ত যোগ্যতা গুলি আছে, তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো –
- বয়স: আবেদনকারী প্রতিবন্ধী হওয়ার জন্য তার বয়স কমপক্ষে ৬ বছর হতে হবে।
- স্বাস্থ্য: আবেদনকারীকে শারীরিক-মানসিক অক্ষম হতে হবে।
- অবস্থান: আবেদনকারী প্রতিবন্ধী হওয়ার আগের এলাকার বাসিন্দা হতে হবে।
- আয়: বার্ষিক আয় হতে হবে ৩৬,০০০ টাকা বা তার কম।
উপরের শর্তগুলির মধ্যে যে কোনও একটি শর্ত পূরণ করলেই বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা দেবে এবং তাকে লিপিবদ্ধ বা নির্বাচিত করতে পারে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা ২০২৩?
এবারের (২০২৩-২৪) প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিবন্ধিতা খাতে মোট বরাদ্দ তিন হাজার ৭১০ কোটি টাকা, যা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ২.৯৪ শতাংশ। মোট বাজেটের ০.৪১ শতাংশ। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা ৮৫০ টাকা অপরিবর্তিত আছে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কিভাবে পাবো?
প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন-উত্তর:
প্রতিবন্ধী ভাতা কি?
প্রতি মাসে 1000/- শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রাজ্য সরকারের কর্মচারী এবং কর্মীদের জন্য এবং এছাড়াও প্রতিবন্ধী সন্তানের কর্মচারীদের জন্য। সর্বোচ্চ সিলিং রাখা হয়েছে টাকা। 2000/- প্রতি মাসে উভয় ভাতা একত্রে গ্রহণযোগ্য ক্ষেত্রে এনটাইটেলমেন্টের জন্য।
প্রতিবন্ধী ভাতা মাসিক কত?
বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতা বাংলাদেশ সরকার দ্বারা নির্ধারণ করা হয়েছে মাসিক ৮৫০ টাকা।
প্রতিবন্ধী ভাতা কতদিন পর পর প্রদান করে থাকেন?
অবশ্যই, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রতি মাসে চারবার প্রদান করা হয়, অর্থাৎ তিন মাস পর পর।
প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে প্রতিবন্ধিতার বয়স কত হতে হয়?
অবশ্যই, প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে প্রতিবন্ধিতার বয়স অবশ্যই সর্বনিম্ন ৬ বছর হতে হবে।
বাৎসরিক কত টাকা আয় হলে একজন প্রতিবন্ধী ভাতা পাবে?
যদি একজন প্রতিবন্ধীর বাৎসরিক আয় ৩৬ হাজার টাকার নিচে হয়, তাহলে সে প্রতিবন্ধী ভাতা পাবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা বিষয়ে আজকের শেষ কথা,
তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানলাম প্রতিবন্ধী ভাতা কি? প্রতিবন্ধী ভাতা কয় মাস পর পর দেয় সম্পূর্ণ বিষয়ে।
প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন কার্যক্রম চালু থাকে। বিশেষ করে প্রতিবছর আগস্ট মাসের শুরু থেকে প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন করা যায়।
আশা করি, নির্ধারিত সময়ে উপরোক্ত সকল দিকনির্দেশনা মেনে সঠিকভাবে আবেদন করলে, নির্দিষ্ট ভাতার আওতাভুক্ত হয়ে প্রতিবন্ধী সকল নাগরিকের ভাতার অধিকার নিশ্চিত হবে।