কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়? (ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা উপায়)

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন, আপনারা কি ঘরে বসে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে চান? ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় খুঁজছেন? আপনারা জেনে খুশি হবেন যে ব্লগ সা্ইট থেকে এবং ইউটিউব থেকে ইনকামের মতো এখন ফেসবুক থেকেও টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

তাই, আপনি চাইলে একটি ফেসবুক একাউন্ট খুলে তাতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

তাই ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় ? টাকা আয় করার উপায় গুলো কি ? এসম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের আর্টিকেলে, How to make money from Facebook?

তাই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

Facebook হলো বিশ্বের সকল সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় ওয়েবসাইট। এই ফেসবুকের প্রায় 2.96 বিলিয়ন ইউজার মাসিক একটিভ রয়েছে । এবং এর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

আমরা সবাই ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় অন্যের পিকচার, কনটেন্ট, ভিডিও, সাহিত্য ইত্যাদি দেখে বা চেটিং করে অযথা সময় ব্যায় করে থাকি।

কিন্তু আপনি চাইলে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু উপায় অবলম্বন করে এই বিশাল সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে একটি ইনকামের উপায় হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

তবে, ফেসবুক থেকে ইনকাম করা একদমই সহজ এবং সোজা নয়। ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম কঠোর পরিশ্রম এবং সময় দিতে হবে।

তবে হতাশ হবার কিছু নেই, নিচে বর্ণিত উপায় গুলো ব্যবহার করে বর্তমানে অনেকেই ফেসবুক থেকে ইনকাম করতেছেন।

আপনিও চাইলে সেই উপায়গুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনার ইনকামের একটি পথ বের করে নিতে পারেন।

কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়?

ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য যে সমস্ত জিনিস প্রয়োজন সেগুলোর সবকিছুই আপনার প্রস্তুত থাকতে হবে। নয়তো আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন না।

তাই আমি যে বিষয়গুলো বলতে চলেছি তার সবকিছু ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য আপনার থাকা আবশ্যক।

• সর্ব প্রথম আপনার ব্যক্তিগত একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকতে হবে।
• ফেসবুক পরিচালনার জন্য আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতে হবে।
• আপনার ডিভাইসে একটি ভালো ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে।
• নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে দ্রুত ইনকাম করার জন্য টার্গেটেড অডিয়েন্স (followers) দের প্রয়োজন।
• আপনাকে অনেকটা ক্রিয়েটিভ এবং অনুসারী হতে যাতে অন্যরা কিভাবে কাজ করছে সেই বিষয় গুলোর ওপর নিয়মিত নজর দিতে পারেন।

যদি ওপরের বর্ণিত সকল বিষয়গুলি থেকে থাকে তাহলে আপনি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি রয়েছেন। আর না থাকলে সেই বিষয়গুলো আগে আপনি তৈরি করে নিন।

ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা কয়েকটি উপায়-

আমি আপনাদেরকে আগেও বলেছি যে, ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা অতটা সহজ নয়। তবে ইন্টারনেট থেকে কিছু প্রমানিত উপায় রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি চাইলে ফেসবুক থেকে দৈনিক ৫০০ বা তারও বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

যা বর্তমানে অনেকেই করছে। Facebook কে অনলাইন আয়ের মাধ্যম বানিয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে নিচের ফেসবুক থেকে টাকা ইনকামের উপায়গুলো অনুসরণ করুন-

১. Facebook মার্কেট প্লেস থেকে ইনকাম-

আপনারা হয়তোবা অনেকেই ফেসবুক market place এর ব্যাপারে জেনেছেন।

Facebook এর মাধ্যমে আপনি যে কোন product, সার্ভিস বা offer নির্দিষ্টভাবে পাবলিশ করে লোকদেরকে দেখাতে পারবেন।

যা একটি online শপিং website এর মতোই কাজ করে থাকে। যেখানে ফেসবুক একাউন্টধারী যে কোন ব্যক্তি নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অনলাইনে পাবলিশ- ডিসপ্লে করে এর দ্বারা টাকা ইনকাম করতে পারেন।

সহজ কথায়, আপনি কি কোন পন্য বা পরিসেবা বিক্রি করতে চান? তাহলে ঘরে বসে “Facebook মার্কেট পেলসের” মাধ্যমে সেই পণ্য বা পরিসেবার বিস্তারিত তথ্য লাখ লাখ মানুষকে ডিসপ্লে করে জানিয়ে দিতে পারেন এবং তা বিক্রি করতে পারেন।

এরপর আপনার দেওয়া ডিসপ্লে তথ্য মতে যদি কেও সেই পন্য কিনতে আগ্রহী হয়, তাহলে সে আপনাকে ফেসবুক অথবা মেসেঞ্জারে মাধ্যমে আপনার সাথে কন্টাক করবে।

তা রপর আপনার এবং কাস্টমারের সমন্বয়ে পন্যটি ঘরে বসে বিক্রি করতে পারবেন। যত দিন যাবে আপনার কাস্টমার ততো বেশি হতে থাকবে। এতে করে আপনার ইনকামও বাড়তে থাকবে। 

Market place থেকে কিভাবে বেশি টাকা ইনকাম করবেন?

আপনাকে প্রথমে বেছে নিতে হবে যে কোন প্রোডাক্ট এর চাহিদা অনলাইনে বেশি রয়েছে এবং কোন wholesaler বা দোকানদার কম দামে দিচ্ছে। যেমন: থ্রি পিছ, শাড়ী, ছোট বাবুদের জুতা ইত্যাদি যাচাই করে কিনতে হবে।

তারপর তা আপনার ফেসবুক একাউন্ট থেকে “Facebook market place” এ গিয়ে product এর ছবি, দাম, ডিটেলস, মোবাইল নম্বর সহ দিয়ে দিতে হবে। এখানে আপনি আপনার product এর ডিসপ্লে বা বিজ্ঞাপন একদম ফ্রিতে দিতে পারবেন। 

আপনি চাইলে আপনার দেওয়া বিজ্ঞাপন ফেসবুক গ্রুপ, প্রোফাইল এবং “promote ad” অপশনের দ্বারা যে কোনো দেশ, শহর বা লোকাল এরিয়ায় দেখাতে পারবেন।

আপনার দেওয়া বিজ্ঞাপন বা প্রোডাক্ট কারো পছন্দ হলে, সে আপনাকে সরাসরি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে দামাদামি বা প্রোডাক্ট এর বেপারে বিস্তারিত কথা বলতে পারবে।

আপনার অবিশ্বাস মনে হলেও, বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনেকেই অনলাইন ব্যবসা চলিয়ে টাকা ইনকাম করছে। তাই আপনি চাইলেও এইভাবে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

একটি কথা মনে রাখবেন, অনলাইন ব্যবসার মূল বিষয় হলো- চাহিদা এবং কম দাম।

আপনি যদি, প্রচুর চাহিদা সম্পন্ন কোনো প্রোডাক্ট লোকাল মার্কেট থেকে কিনে কম দামে বিক্রি করেন, তাহলে সেই product এর ফেসবুক থেকে অনেক গ্রাহক পেয়ে যাবেন এবং প্রচুর পরিমানে বিক্রি করতে পারবেন।

আরো পড়ুন- 

• ওয়েবসাইট কি? ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ
• ওয়ার্ডপ্রেস কি? ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম
• কিভাবে লোগো তৈরি করব? লোগো তৈরি করার নিয়ম

বিশেষ করে লোকাল এরিয়া থেকে কাস্টমার পাওয়া অনেকটা সোজা হয়ে থাকে। কেননা, আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডরা আপনার লোকাল শহরের আশেপাশেরই বেশিরভাগ হয়ে থাকবে।

তাই আপনি আপনার বন্ধুদেরকে আপনার কাস্টমার বানিয়ে নিতে পারবেন। এতে করে,  প্রোডাক্ট delivery দিতেও তেমন কোনো অসুবিধা হবেনা।

২. ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করে টাকা আয় করন-

ফেসবুকের “video monetization” এর বেপারে আপনারা অনেকেই হয়তোবা শুনেছেন।

এই acebook video monetization বা In-stream ads ফেসবুকের তরফ থেকে এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক ফ্যান পেজে ভিডিও আপলোড করে আনলিমিটেড ইনকাম করতে পারবেন।

তো বন্ধুরা চলুন ফেসবুকে ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করে টাকা আয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

In-stream ads বা video monetization কি?

মূলত In-stream ads হচ্ছে ছোট্ট ছোট্ট বিজ্ঞাপন, যেগুলি সাধারণত আপনি আপনার ফেসবুক ভিডিওতে দেখাতে এবং তার থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

এজন্য আপনার একটি ফেসবুক পেজের প্রয়োজন হবে। তাতে আপনি ভিডিও আপলোড করে সেই ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

আর এটা সম্পূর্ণ YouTube channel এর মতোই। YouTube channel এ যেভাবে ভিডিও আপলোড করা হয় এবং ভিডিওতে Google AdSense এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করা যায়।

ঠিক তেমনি ভাবে Facebook পেজে নিজের বানানো ভিডিও আপলোড করে, In-stream ads এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।

ইউটিউবে ইনকাম করার জন্য যেমন কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে, ঠিক তেমনই ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম পদ্ধতি মানতে হবে।

বর্তমানে ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি সব থেকে লাভজনক ও জনপ্রিয় উপায় হয়ে উঠছে।

৩. Affiliate marketing করে আয় করন-

Affiliate marketing হলো এমন একটি বিষয় যা সকল ব্লগার বা ইউটিউবারদের কাছে পরিচিত একটি বিষয়।

অনলাইনে টাকা ইনকামের জন্য এটা একটি লাভজনক এবং কার্যকরী উপায়। বর্তমানে ঘরে বসে Affiliate marketing করে অনেকেই লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন ।

Affiliate marketing হলো এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনি অনলইন থেকে বিভিন্ন রকমের “online shopping website” থেকে আপনার পছন্দমতো product বাছাই করে নিতে পারবেন।

তাছাড়াও বাছাই করা প্রোডাক্টগুলো নিজের ব্লগ, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলে দেখিয়ে লোকদেরকে প্রমোট করে কমিশন (commission) অর্জন করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।  

অনলাইন শপিং সাইট যেমন, Amazon, Flipkart বা snapdeal এর যেকোনো প্রোডাক্ট আমাদের এফিলিয়েট লিংকের দ্বারা মানুষদেরকে শেয়ার করার বা প্রমোট করার সুযোগ  দিয়ে থাকে।

আমাদের শেয়ার করা প্রোডাক্ট এর লিংক থেকে যখন কেউ কিছু অনলাইনে কেনা কাটা করবে, তখন আমাদেরকে কিছূ কমিশন Affiliate কোম্পানি গুলো দিয়ে থাকে।

পিন্টারেস্ট কি? পিন্টারেস্ট থেকে আয় (Earn money from Pinterest)

আলাদা আলাদা প্রোডাক্টের জন্য আলাদ আলাদা কমিশন (commission) দেওয়া হয়ে থাকে । মূলত এটাই হলো Affiliate marketing পদ্ধতি।

ধরুন, আপনার একটি ফেসবুক ফ্যান পেজ (Facebook page) আছে বা একটি ফেসবুক গ্রুপ (Facebook group) আছে। আপনি সেখানে বিভিন্ন রকমের প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে রাখতে পারবেন।

এরপর যদি কেউ আপনার শেয়ার করা প্রোডাক্টের লিংক থেকে কিছু কেনাকাটা করে, তাহলে আপনি যেই কোম্পানির লিংকটি শেয়ার করেছেন তাদের পক্ষ থেকে কমিশন (commission) পেয়ে যাবেন।

সহজ কথা হলো, বর্তমানে যেকোনো অনলাইন শপিং সাইটে নিজেকে affiliate marketer হিসেবে রেজিস্টার করা যায় এবং তাদের যেকোনো প্রোডাক্ট শেয়ার করে বা ffiliate marketing  করে আয় করা যায়।  

কিছু বিখ্যাত এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গুলো-

• Tapfiliate
• Affise
• Impact Partnership Cloud
• ShareASale
• Affiliatly
• Rakuten Marketing
• Amazon affiliate program
• eBay affiliate program

৪. ডাইরেক্ট local Product বিজ্ঞা/পনের দ্বারা-

আপনার যদি একটি ফেসবুক ফ্যান পেজ (Facebook page) থাকে এবং সেখানে অনেক বন্ধু থাকে অথবা একটি ফেসবুক গ্রুপ (Facebook group) আছে।

সেখানে হাজার হাজার লাইক (like), কমেন্ট রয়েছে তাহলে তাতে আপনি লোকাল প্রোডাক্টের বিজ্ঞা/পন দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। 

আপনি চাইলে যে কোনো বিজ্ঞাপন যেমন- নতুন শো-রুম, দোকান, রেস্টোরেন্ট ইত্যাদি বিজ্ঞাপন নিজের ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে বিজ্ঞাপনদাতাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।

এজন্য আপনি আপনার আশে পাশে ব্যবসায়ীদেরকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনি কি আপনার ব্যবসা প্রচার ও প্রসারের জন্য বিজ্ঞা/পন দিতে চান?

তারা আগ্রহী হলে আপনি তাদের বিজ্ঞা/পন গুলো সংগ্রহ করে আপনার ফেসবুক পেজ এ যেখানে হাজার হাজার লোক একটিভ রয়েছে সেখানে প্রচার করতে পারেন।

এজন্য যে কোনো বিষয়ের বিজ্ঞা/পন দেখানো বা প্রমোট করার জন্য ফেসবুক সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে থাকে।

তাই আপনার ফেসবুক পেজের ১০-১৫ হাজার লাইক থাকলে অতি সহজেই আপনি লোকাল advertiser পেয়ে যাবেন যারা ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দেখানের জন্য টাকা দিয়ে থাকে।

আপনি আপনার পেজের লাইক, একটিভ মেম্বারদের উপর ভিত্তি করে মোটা অংকের টাকা বিজ্ঞাপন দাতাদের কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারবেন।

এছাড়াও অনেক ব্লগার এবং ইউটিউব চ্যানেল মালিক রয়েছেন যারা আপনার পেজে তাদের বিজ্ঞা/পন দেখানোর জন্য আপনার সাথে কন্টাক্ট করে আপনাকে টাকা দিবে বিনিময়ে তারা নিজেদের ব্লগে বা ইউটিউবে সোশ্যাল ট্রাফিক (social traffic) পেয়ে যাবে।

এজন্য আপনাকে কিছু ব্লগ বা ইউটিউব মালিকদেরকে খুজে বের করতে হবে যারা সোশ্যাল ট্রাফিক কিনতে চান।

আরো জানুন,

• জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে কিভাবে? জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করার নিয়ম
• পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় | পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় বিক্রয় করার উপায়
• কম্পিউটারে স্ক্রিনশট কিভাবে নিতে হয় || কম্পিউটারে স্ক্রিনশট নেওয়ার নিয়ম

৫. ফেসবুক পেজ বিক্রি করে ইনকাম-

ফেসবুক পেজ এর বর্তমানে অনেক চাহিদা রয়েছে। এমন অনেক ব্লগার বা ইউটিউবার রয়েছেন যারা তাদের সাইট বা চ্যানেল উন্নতির বা প্রোমোশনের (promotion)  জন্য ফেসবুক পেজ কিনে থাকেন।

আপনার Facebook page টি যদি ভালো সংখ্যায় লাইক (likes) থাকে তাহলে, আপনি সেই পেজটিকে ভালো দামে বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন।

আপনার ফেসবুক পেজটি বিক্রির জন্য আপনি আপনার পেজে “ফেসবুক পেজ বিক্রি” সংক্রান্ত একটি পোস্ট করতে পারেন অথবা ফেসবুকের মধ্যে অনেক কেনা-বেচা সাইটেও আপনি পোস্ট দিতে পারেন।

কেউ যদি আপনার পেজ কিনতে আগ্রহী হয়, তাহলে সে আপনাকে ডাইরেক্ট ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ (contact) করতে পারবে এবং আপনি ঘরে বসেই ফেসবুক পেজ বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

৬. ফেসবুক গ্রুপ দ্বারা ইনকাম-

আপনার যদি একটি ফেসবুক গ্রুপ থাকে, যেখানে প্রচুর members বা followers রয়েছে। তাহলে সেই গ্রুপ কে কাজে লাগিয়ে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

Facebook group থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে নিজের Facebook account থেকে একটি Group তৈরি করতে নিতে হবে।

তারপর গ্রুপে নিয়মিত পোস্ট করতে হবে এবং কমপক্ষে ১০ হাজার active members জোগাড় করতে হবে । এবং গ্রুপের মেম্বারদেরকে সব সময় গ্রুপে active রাখার চেষ্টা করতে হবে।

গ্রুপের মেম্বারদে একটিভ রাখার জন্য questions, blog post, images, videos বা polls ইত্যাদির পোষ্ট পাবলিশ করতে হবে।

একবার আপনার গ্রুপটি জনপ্রিয়তা অর্জন করলে, ১০ হাজার followers হয়ে গেলে আপনি নিচের উপায়গুলোর মাধ্যমে ফেসবুক গ্রুপ থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন-

1. আপনি নিজের product/book/services ইত্যাদি বিক্রি করতে পারবেন।
2. Affiliate marketing এর মাধ্যমে।
3. Paid surveys গুলোর মাধ্যমে।
4. Sponsored content গুলো publish করে।
5. Group থেকে বিভিন্ন blogs বা YouTube channel গুলোতে traffic বিক্রি করিয়ে।
6. নিজের group বিক্রি করে।

৭. PPD Program যুক্ত করে-

PPD অর্থাৎ Pay Per Down/load, যেখানে আপনাকে প্রত্যেক down/load এর বিপরীতে টাকা প্রদান করা হবে।

PPD এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে একটি ভালো এবং trusted PPD program এর সাথে যুক্ত (join) হতে হবে।

PPD program এর সাথে যুক্ত (join) হওয়ার পর আপনাকে PPD program গুলোর কিছু products down/load করতে দেওয়া হবে।

তারপর, আপনি এই digital products (apps, games) গুলো নিজের Facebook group এর মধ্যে post করে সেগুলোকে লোকদের দিয়ে down/load করাতে পারবেন।

Apps, games, software ইত্যাদি গুলো যত বেশি লোকেরা down/load করবে, আপনার ততো বেশি PPD program থেকে ইনকাম হবে। 

তাই আপনার ফেসবুক গ্রুপের members বা followers থাকবে যত বেশি বাড়াতে পারবেন, ততো বেশি লোক সেগুলো ডাউন/লোড করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং আপনার ইনকাম ততো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৮. ফ্রিল্যান্সিং করে ফেসবুকে আয় করন-

আপনি যদি কোন বিশেষ কাজের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার অভিজ্ঞতার কাজটি করে আপনি প্রচুর পরিমানে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে কে কাজ দিবে?

আপনার যেই কাজটির অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই কাজের সাথে জড়িত ফ্রিলান্সিং গ্রুপ প্রচুর রয়েছে। আপনি চাইলে সেই গ্রুপে গিয়ে আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে সেখানে শেয়ার করতে পারেন।

এতে করে, গ্রাহকরা আপনার সাথে কমেন্ট এবং ডাইরেক্ট চ্যাটিং এর মাধ্যমে কথা বলতে পারবে এবং কাজের চুক্তিও করে নিতে পারবেন।

যদি কোন ব্যক্তি আপনার কাছ থেকে কাজ করিয়ে নিতে আগ্রহী হয়। তাহলে, আপনি তাকে ফ্রিল্যান্সিং পরিষেবা প্রদান করার মাধ্যমে টাকা ইনকামের সুযোগ পাচ্ছেন।

আর যদি আপনার কোনো কাজের তেমন অভিজ্ঞতা না থাকে। তাহলে, চিন্তার কারণ নেই YouTube-এর মাধ্যমে নিজের পছন্দ মতো যে কোনো বিষয়ে একদম ফ্রিতে কাজ শিখে নিতে পারেন।

আপনি ২-৪ মাস সময় ব্যায় করে logo design, video editing, content writing বা অন্যান্য বিষয়ে  শিখে নিতে পারবেন।

তারপর যখন নিজেকে সম্পূর্ণ অভিজ্ঞ হিসেবে দার করাতে পারবেন, তখন ফেসবুক ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলো খুঁজতে ও সেগুলির সমাধান করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করার লাভ ও সুবিধা-

• যেকোনো সময় যেকোনো জায়গার থেকে কাজ করা যায়।
• Facebook group এবং page গুলোর সাহায্যে খুব সহজেই গ্রাহক পাওয়া যায়।
• ফেসবুক কমেন্ট এবং চ্যাট এর মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকদের সাথে কথা বলা যায়।
• সঠিক ভাবে কাজ সম্পূর্ণ করার পর সাথে সাথেই পেমেন্ট পাওয়া যায়।
• ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনি নিজেই নিজের মালিক।

৯. ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তদারকি করে ইনকাম-

বর্তমানে অনেকেই রয়েছেন যারা অন্যদের ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজগুলো পরিচালনা করে টাকা ইনকাম করে থাকে । আপনিও চেষ্টা করতে পারেন।

বিশ্বের বড় বড় সেলিব্রেটি এবং কোম্পানি গুলো নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের প্রোফাইল এবং পেজ এর মাধ্যমে একটিভ থাকেন।

কিন্তু প্রোফাইল বা পেজ পরিচালনার জন্য তাদের হাতে তেমন সময় থাকে না। এজন্য তারা ফেসবুক ম্যানেজার নিয়োগ করে থাকেন।

এসকল ম্যানেজাররা সেলিব্রেটিদের পক্ষে তাদের ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া পেজ গুলিতে পোস্ট, কমেন্ট ইত্যাদি মেইনটেন্স করে থাকেন।

তাই আপনিও একজন Facebook Account Manager হিসেবে অন্যলোকদের ফেসবুক পরিচালনার বিনিময়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

এক্ষেত্রে মূলত আপনার কাজের বিনিময়ে আপনাকে বেতন দেওয়া হবে।

ফেসবুক একাউন্ট পরিচালনা করার সুবিধা-

• বড় বড় নামী-দামী সেলেব্রিটি বা কোম্পানির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পরিচালনার সুযোগ রয়েছে।
• কাজের বিনিময়ে প্রতি মাসে বেতন দেওয়া হবে।
• এই কাজ পার্ট-টাইমেও করা যাবে।
• ঘরে বসে বা যেকোনো জায়গার থেকে এই কাজ করার সুবিধা দেওয়া হয়।

ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জনের সুবিধা ও লাভ সমূহ-

বন্ধুরা চলুন, এখন আমরা ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার কিছু সুবিধা এবং লাভ সমূহের বিষয়ে জেনে নেই।

• আপনি যদি ঘরে বসে কোনো রকম টাকা ইনভেস্ট না করে অনলাইনে টাকা উপার্জন করতে চান, তাহলে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকামের এই উপায়গুলোর ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
• আপনি যদি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার নিয়মগুলো ব্যবহার করে নিয়মিত টাকা ইনকাম করতে পারেন। তাহলে, আপনার আর বাইরে কোথাও চাকরি করার দরকার পরবে না। আপনি নিজেই আপনার মালিক হয়ে যাবেন।
• আপনি যদি কোথাও চাকরি করে থাকেন। তাহলে, ছুটির জন্যও আপনার বেতন কেটে নেওয়া হয়। তবে, এই ধরনের অনলাইন ইনকামের উপায়গুলিতে ১ দিন কেন যদি ১ মাস ও আপনি কাজ না করেন, তাহলেও আপনার আগে থেকে করা কাজগুলির উপর নিয়মিত ইনকাম হতেই থাকবে।
• আপনি ফেসবুক থেকে আয় করার এই উপায় গুলির মাধ্যমে দিনে ২-৩ ঘন্টা সময় দিয়ে বা নিজের ইচ্ছামতো সময় দিয়ে কাজ করতে পারবেন । তবে, আপনি যত বেশি সময় দিবেন ততো বেশি ইনকাম করতে পারবেন।
• এই ধরনের কাজে কোন আপনার উপর কোনপ্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয় না। আপনি সম্পূর্ণ চাপমুক্ত ভাবে ফ্রি মাইন্ড সহকারে কাজগুলো করতে পারবেন।
• ফেসবুক থেকে আয় করার কোনো নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা নেই। আপনি এখন মাসে ফেসবুক থেকে ১০ হাজার টাকা ইনকাম করছেন। এমনো হতে পারে কিছুদিন পর আপনার মাসে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করার সুযোগ হয়ে যাবে।
• ফেসবুকে নিয়মিত অনেক ইউজার একটিভ থাকে, এখানে যে কোনো পণ্য বিক্রি, এফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে কাজ করে অনেক বেশি ইনকাম করার সুযোগ পাওয়া যায়।

অবশ্যই পড়ুন-

• ভিডিও দেখে টাকা আয় করার apps এবং সেরা ওয়েবসাইট সমূহ
• ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার বিদেশি সাইট- সেরা সাইটসমূহ
• কিভাবে একটি ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করা যায় ? বিস্তারিত জানুন  

প্রশ্ন-উত্তর:

Q. ফেসবুক থেকে কিভাবে $100 ইনকাম করা যায়?

উত্তর: ফেসবুক থেকে দিনে $100-$500 ইনকাম করার জন্য আপনার একটি product থাকা জরুরী। তাছাড়া, আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধমেও অনায়াসে দিনে $100  ইনকাম করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার মার্কেটিং এর উপর কলা-কৌশল গুলোর যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকতে হবে।

Q. ফেসবুক থেকে কত টাকা আয় করা যাবে?

উত্তর: অনেকেই ফেসবুক থেকে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন। এর জন্য আপনার কাছে এমন একটি প্রডাক্ট থাকতে হবে যার দ্বারা লোকদের প্রয়োজন মেটানো যাবে বা সমস্যার সমাধান করা যাবে।

তাছাড়া লোকদের চাহিদা থাকা পণ্য গুলোকে খূব সহজেই ফেসবুক পেজ, গ্রুপ বা প্রোফাইলের মাধ্যমে প্রচার করে বিক্রি করা যায়।  

Q. ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে কত সময় লাগবে?

উত্তর: ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমা বলা যাবে না। সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার কি পরিমাণ সময় ফেসবুকের পিছনে দিচ্ছেন? কি পরিমানে কাজ করতেছেন তার উপর। তবে ধৈয্য সহকারে লেগে থাকলে ইনকাম হবেই আশা করা যায়।

Q. কত ফলোয়ার হলে ফেসবুকে টাকা আয় করা যাবে?

উত্তর: সাধারণত, ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার জন্য কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার্স থাকতে হবে।

Q. ফেসবুকে কত ভিউতে কত টাকা দেয়?

উত্তর:  আপনার ভিডিওতে যত বেশি ভিউ হবে আপনি ততোবেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সাধারণত, প্রায়- 100,000 ভিউতে 10-50 ডলার ইনকাম করা সম্ভব।

Q. ফেসবুক কি লাইক ও কমেন্টের জন্য টাকা দেয়?

উত্তর: আমার জানামতে ফেসবুক কখনো like বা comment-এর জন্য টাকা দেয়না।

ফেসবুক ইনকাম নিয়ে আজকের শেষ কথা,

তো বন্ধুরা, কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়? ফেসবুকে টাকা আয় করার উপায় এবং নিয়ম গুলো সম্পর্কে আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। 

আপনারা যদি ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় খুঁজে থাকেন। তাহলে, আমি উপরে যে টাকা ইনকাম করার উপায়গুলি সম্পর্কে বলেছি, সেগুলো দ্বারা ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় বিষয়ক আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।

আর যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধূদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ