ইউটিউব চ্যানেল সেটিং- বিস্তারিত জেনে নিন

আজকের আর্টিকেলে আপনারা ইউটিউব চ্যানেল সেটিং,  ইউটিউব সমস্যা সমাধান করার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আপনারা অনলাইনে সার্চ করে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম, নতুন ইউটিউব চ্যানেল , ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা ইনকাম, বাংলা ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি বিষয়ে সচরাচর ভিডিও পেয়ে যাবেন।

কিন্তু ইউটিউব চ্যানেলের সেটিং (youtube channel setting) বা ইউটিউব সেটিংস করার পদ্ধতি সচরাচর পাবেন না।

তাই আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে ইউটিউব চ্যানেল সেট করার গোপন টিপ্স সম্পর্কে আলোচনা করবো।

যে সেটিংগুলো আপনার ইউটিউব চ্যানেলে সেট করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি খুব সহজেই এবং দ্রুত ভালো একটি রেজাল্ট দিবে।

তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

গুরুত্বপুর্ণ ইউটিউব চ্যানেল সেটিং- 

যে কোনো একাউন্ট খোলার পর সেটিকে কিছু সেটিং করে নিতে হয়। সঠিকভাবে সেট না করলে সেই একাউন্ট টি বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে।

ঠিক তেমনি ভাবে ইউটিউব চ্যানেলও একটি একাউন্ট। তাই আপনি যখন নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন তখন আপনাকে কিছু সেটিং করে নিতে হবে।

তবে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল সেটিং করে রাখতে পারলে ইউটিউব চ্যানেল খুব দ্রুত এবং সহজেই গ্রো করতে পারবেন।

YouTube Chanel তৈরি করার পর আমরা সচরাচর যে সেটিং গুলো করে থাকি । এর চেয়ে আমি নিচে যে সেটিংগুলোর বিষয়ে আলোচনা করবো।

সেগুলো যদি আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে সেট করে নিতে পারেন তাহলে আপনাকে আর অন্যকোনো সেটিং করতে হবে না।

সেটিংগুলো করার পর আপনার কাজ হবে শুধু ইউটিউব চ্যানেলে ভালো ভালো video content তৈরি করার মাধ্যমে চ্যানেলটিকে ফোকাস করা।

আরো জানুন,

চলুন, আর দেরি না করে ইউটিউব চ্যানেলের সেটিংসগুলো সম্পর্ক জেনে নেই।

১. Channel status and features

আপনার ইউটউব চ্যানেলে লগইন করে “Your Channel >> Settings” এ গিয়ে “channel status and features” অপশন পেয়ে যাবেন ।

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল

এরপর আপনি সেখানে আপনার চ্যানেলের বিষয়ে জরুরী কিছু সেটিং গুলো দেখতে পাবেন।

যেমনটা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন।

“channel status and features” এ ক্লিক করার পর আপনি ছবির মতো Channel-এর সাথে জড়িত ৩ টি options পাবেন। যেমন-

  • Basic info
  • Advanced settings
  • Feature eligibility

Basic info

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল

এখানে আপনি YouTube channel settings সম্পর্কে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেটিং পাবেন।

১. Country of residence

Country of residence অপশনে আপনি আপনার দেশ select করে দিন।

অর্থাৎ আপনি কোন দেশ থেকে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে পরিচালনা করছেন সেটাই এখানে দিয়ে দিন।

২. কিওয়ার্ড (Keywords)

আর দ্বিতীয় basic settings টি হচ্ছে keywords সেটিং।

কিওয়ার্ড অপশনে আপনাকে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের রিলেটেড keywords দিতে হবে।

উদাহরণ স্বরূপে, আপনি যদি blogging সম্পর্কে ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করেন । তাহলে, আপনি এরকম রিলেটেড কিওয়ার্ড (blog, how to create blog, blogging, SEO, blogging income ) ইত্যাদি যোগ করতে পারেন।

আরো পড়ুন,

আপনি keyword অপশনে আপনার চ্যানেলের সাথে জড়িত keywords গুলো যোগ করার ফলে YouTube SEO করার সময় অনেক উপকারে আসবে।

Advanced settings

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল

“Advanced settings” অপশনে যে সেটিং গুলো পাবেন সেগুলো যেমন আছে তেমনি রাখুন । শুধূ “Audience” নামের অপশনটিতে সেট করুন।

“Audience” অংশে আপনি-

Do you want to set your channel as made for kids? লেখা পাবেন,

যার অর্থ হলো- আপনার তৈরি করা ভিডিওগুলো কি বাচ্চাদের জন্য তৈরি?

আপনার তৈরি করা কন্টেন্ট গুলো যদি বাচ্চাদের জন্য তৈরি করে থাকেন তাহলে,

Yes, set this channel as made for kids“, অপশনটি সিলেক্ট করে দিন।

আর যদি আপনার তৈরি করা কন্টেন বাচ্চাদের সাথে সম্পর্কিত তৈরি না করে থাকেন তাহলে,

“No, set this channel as not for kids”, অপশনটি সিলেক্ট করে দিন।

তারপর আপনি প্রতিটি ভিডিও আপলোড করার সময় যদি এই অপশন সিলেক্ট করে দিতে চান তাহলে,

“I want to review this setting for every video” সিলেক্ট করে দিন।

২. YouTube channel ভেরিফিকেশন

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পর সর্বপ্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো- “channel verification“ সম্পন্ন করা।

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল
YouTube channel ভেরিফিকেশন

সাধারণত ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফিকেশন করতে বেশিরভাগ সময় মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হয়।

ভেরিফিকেশন করার সময় আপনার মোবাইলে আসা কোডটিকে ইউটিউবের ভেরিফিকেশন কোড বক্সে লিখে দিতে হবে।

এতেকরে ইউটিউব বুঝবে যে আপনি একজন মানুষ রোবট না।

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার সময় ভেরিফিকেশনটি সম্পন্ন করে নিতে পারেন।

একবার চ্যানেলটি ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে কিছু ইউটিউব ফিচার আনলক করে দেওয়া হয়। যেমন-

  • Upload videos longer than 15 minutes
  • Use custom thumbnails
  • Live streaming on desktop

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করবেন?

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করবেন?

ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম অনেকটাই সহজ।

YouTube channel ভেরিফিকেশন , ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল
YouTube channel ভেরিফিকেশন

আপনি আপনার কম্পিউটার থেকৈ “www.youtube.com/verify” লিংক যেতে হবে।

এখানে আপনাকে জিমেইল লগইন করতে বলা হবে।

আপনা যে জিমেইল দিয়ে ইউটিউব একাউন্ট খোলা সেটা দিয়ে লগইন করুন।

এরপর আপনি phone number verify নামের একটি পেজ দেখতে পাবেন সেখানে দুটো steps এ মোবাইল নাম্বার ভেরিফািই করতে হবে।

১ম ধাপ-

  1. আপনি মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করবেন কিভাবে (Text নাকি call) তা সিলেক্ট করে দিন। 
  2. আপনি যে কোন দেশের নাগরিক তা সিলেক্ট করে দিন।
  3. আপনার মোবাইল নাম্বার সঠিকভাবে এখানে দিন।

সবকিছু ঠিকভাবে দেওয়ার পর নিচের “Get Code” অপশনে ক্লিক করে দিন।

২য় ধাপ- আপনার মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের কোড টি ভেরিফিকেশন কোড বক্সে লিখে দিন।

৬ ডিজিটের ভেরিফিকেশন কোডটি লিখে দেওয়ার পর আপনি-

Congratulations, your phone number has now been verified, লেখাটি দেখতে পাবেন।

অর্থাৎ আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি সঠিকভাবে রেডি হয় কমপ্লিট হয়েছে।

৩. ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ করন-

“channel customization“ হলো ইউটিউব চ্যানেলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সেটিং।

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং , ইউটিউব সমস্যা সমাধান , ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম , নতুন ইউটিউব চ্যানেল , বাংলা ইউটিউব চ্যানেল

চ্যানেল কাস্টমাইজ করার জন্য আপনাকে “YouTube studio >> customization“ এ যেতে হবে।

Channel customization-এ যাওয়ার পর এখানে আপনি ৩ টি ভিন্ন ধরনের ট্যাব দেখতে পাবেন।

  1. Layout
  2. Branding
  3. Basic info

Layout-

Layout দিয়ে আপনি আপনার চ্যানেলের Featured video, Channel trailer ইত্যাদি সেটিং করে নিতে পারবেন।

তবে, এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ সেটিং না । তাই শুরুতেই এটি সেট না করলেও চলবে।

Branding-

Branding- এ যেসব সেটিং রয়েছে এগুলো একটি professional YouTube channel এর জন্য অনেকটাই জরুরী।

এই সেটিংগুলো না করলে চ্যানেলটি অনেক low quality সম্পন্ন দেখাবে । এবং ইউজারদের কাছেও অপছন্দনীয় মনে হবে।

এখানে সেটিংগুলো মধ্যে রয়েছে-

Picture: পিকচার অপশন এর মাধ্যমে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য profile picture set করে নিতে পারবেন।

Banner image: এর দ্বারা আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য একটি “Banner image” সেট করে নিতে পারবেন।

Video watermark: আপনি এই অপশনটি দিয়ে আপনার চ্যানেলের জন্য লোগো ডিসপ্লে করতে পারবেন।

Basic info-

Basic info- অপশনে আপনি আপনার চ্যানেলের সাথে জড়িত-  channel name, unique handle, channel Description, Channel URL, Contact info ইত্যাদি বেসিক সেটিং পাবেন।

অবশ্যই পড়ুন, 

এছাড়া আপনি আপনার ছেলেদের হোমপেজে যদি banner-এ links দেখাতে চান সেটিও এই অপশনে পাবেন।

সবগুলো অপশন আপনি ভালো করে খেয়াল করে সঠিকভাবে পূরণ করে দিন।

৪. View advanced settings

ইউটিউবের এই অপশনে এভাবে-  “Your Channel >> Settings >> View Advanced Settings“ যেতে পারেন।

এখানে আপনারা আপনাদের চ্যানেলের সাথে জড়িত জরুরি অপশনগুলো পাবেন।

যেমন-

User ID: আপনার চ্যানেলের User ID এখানে রয়েছে।

Channel ID: আপনার ইউটিউব চ্যানেলের Channel ID এখানে পাবেন।

Move channel-

আপনি যদি কোনো ব্রান্ড নিয়ে ইউটিউবে কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই Move channel সেটিং করে নিবেন।

Move channel সেটিং করার জন্য আপনাকে “Move channel to a brand account” অপশনে ক্লিক করেতে হবে।

এরপর আপনার জিমেইল আইডির পাসওয়ার্ড চাইবে এখানে।

আপনার সঠিক জিমেইল পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি brand account পরিবর্তন হবে।

Delete channel-

আপনি যদি আপনার কোনো ইউটিউব চ্যানেল কোনো কারণে ডিলেট করতে চান তাহলে এই অপশনটি দ্বরা ডিলেট করতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেল ডিলেট করার জন্য আপনাকে সোজা Delete channel লিংকটিতে ক্লিক করতে হবে।

ডিলেট লিংক এ ক্লিক করার পর আপনার জিমেইল পাসওয়ার্ড চাইবে।

সঠিক পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি অটোমেটিক ডিলেট হয়ে যাবে।

আজকের শেষ কথা,

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেল সেটিং,  ইউটিউব সেটিং করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্রই কমেন্ট করে জানাবেন।

আর যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment