ব্যাকলিংক কি? কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়

বর্তমানে অনেক নতুন নতুন ব্লগার রয়েছে। যারা ব্যাকলিংক কি? কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় বা ব্যাকলিংক তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে অজানা।

আবার এমনও অনেক ব্লগার রয়েছেন যারা তাদের নিজেদের ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য কিভাবে ব্যাকলিং তৈরি করবেন তা নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন।

আপনার যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে থাকে এবং আপনার ওয়েবসাইটে যদি আপনি Google search engine থেকে অনেক ভিজিটর্স বা ট্রাফিক পেতে চান তাহলে অবশ্যেই আপনাকে ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে।

ব্যাকলিংক হচ্ছে Off page SEO এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাগ । এবং এই ব্যাকলিংক দ্বারা আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে Search engine ranking খুব ভালো করাতে পারেন।

আরো পড়ুন, 

কারণ, ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি ব্যাকলিংক যত বেশি হবে আপনার ডোমেইন অথরিটি (domain authority) ততো ভালো হবে।

মনে রাখবেন, আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথরিটি যতো ভালো হবে, আপনার ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলোকে গুগল সার্চ রেজাল্টে ততো বেশি র‌্যাংক করাবে।

ফলে, আপনার ওয়েবসাইটে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক আশা বাড়তেই থাকবে।

তাই আপনাকে ব্যাকলিং তৈরি করতেই হবে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য।

আর গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে অনেক ভিজিটর্স পাওয়ার জন্য আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য শুরু থেকেই ব্যাকলিংক তৈরি করতে হব।

এবং ব্যাংকলিংক তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যেতেই হবে।

সেই জন্য তারা গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর্স পাচ্ছে না।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে “ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক কী ” এবং “কিভাবে এস ই ও (SEO) ব্যাকলিংক তৈরি করবেন”, বিস্তারিত জানিয়ে দিব।

তাই আর্টি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ব্যাকলিংক কি? What Is Backlink?

ব্যাকলিংক হচ্ছে-  search engine optimization (SEO) এর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ  অংশ এবং নিজেদের ব্লগের Domain authority, Search engine preference ও search engine ranking ইত্যাদি বাড়ানোর জন্য আমরা আমাদের  ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক তৈরি করে থাকি।

ব্যাকলিংক মানে কি? 

ব্যাকলিংক মানে- আপনার একটি ওয়েবসাইটের “URL লিংক” অন্য আরেকটি ওয়েবসাইটে থাকার প্রক্রিয়া। আর এভাবে সেই ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েব সাইটে একটি external link পাওয়া যায়।

যেমন, 

আমি আর্টিকেলটি লেখার সময়- নিজের ব্লগে কেমন আর্টিকেল লিখবেন? কিছু শব্দের মধ্যে আমার ব্লগের একটি “আর্টিকেলের URL Linkদিয়ে দিলাম। 

যার ফলে, আমার ব্লগের বা ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য URL link এর মাধ্যমে একটি quality backlink পেয়ে গেলেন।

আরো জানুন, 

এভাবেই যখন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপনার ওয়েবসাইটের URL address থাকবে, তখন সেই সকল   external link গুলি হবে আপনার ওয়েবসাইটের এক একটি ব্যাকলিংক।

আর সেই backlink বা এক্সটার্নাল লিংক গুলির মাধ্যমে Google bots আপনার ওয়েবসাইটের link juice pass  করে থাকে।

ফলস্বরূপ, আপনার ওয়েবসাইটে প্রতি গুগলের বিশ্বাস আরো বেড়ে যায় এবং আপনার ওয়েবসাইট Google search ranking খুব দ্রুত হয়ে থাকে।

এতক্ষেণে হয়তো আপনি বুঝে গেছেন যে, ব্যাকলিংক মানে কি? চলুন, এবার জেনে নেই ব্যাকলিংক কত প্রকারের  বা ব্যাকলিংক এর প্রকারভেদ”.

ব্যাকলিংক কত প্রকার এবং কি কি? (Types of backlinks)

আজ আমি আপনাদের জানার সুবিধার্থে back-links এর কিছু প্রকার নিয়ে নিচে আলোচনা করছি।

এতে করে, ব্যাকলিংক প্রকারের বিষয়ে আপনারা ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে যাবেন।

  • Internal links: ইন্টারনাল লিংক হলো আপনার নিজেদের ব্লগের মধ্য থাকা backlinks তৈরি করা। মানে, যখন আপনি ব্লগে আর্টিকেল লিখবেন, তখন নিজের ব্লগের অন্য কোনো আর্টিকেলের লিংক দিয়ে internal backlinks তৈরি করতে পারেন।
  • External links: হলো অন্য ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য কোন ব্যাকলিংক, যা আমি উপরেও বলেছি। এক্সটার্নাল ব্যাকলিংকগুলো অন্যকোন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে তৈরি করে নিতে হয়।
  • Link juice: অন্যের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে hyper link এর মাধ্যমে যখন backlink তৈরি করবেন, তখন Google bots সেই লিংক গুলি follow করবে এবং আপনার ব্লগে link juice পাস করবে। এই লিংক জুস আপনার ব্লগের Domain Authority বাড়িয়ে দিয়ে search engine traffic বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
  •  Low- quality links: যখন খারাপ, spam, low quality বা harvested website থেকে আপনার ওয়েবসাইটে backlink তৈরি হয়ে আসে তখন low quality links তৈরি হয়ে থাকে। এই ধরণের backlinks আপনার ব্লগের জন্য অনেক খতিকারক হয়ে থাকে।
  • High- quality links: যখন কোনো ভালো এবং high quality website যার DA এবং PA অনেক ভালো, সেখান থেকে যদি আপনার ব্লগে backlink আসে, তাহলে সেই ব্যাকলিংক high quality external link বলা হয়।
  • No- follow links: যখন, অন্যদের ওয়েবসাইট থেকে আশা backlink গুলির rel=nofollow” ট্যাগ ব্যবহার করা থাকে তখন সেই ব্যাকলিংক গুলি নো ফলো ব্যাকলিংক হয়ে থাকে। এই ধরণের লিংকের মাধ্যমে google bot তাদের link juice পাস করেনা। তাই, এই ধরণের backlinks বিশেষ কোন কাজের নয়।
  • Do- follow links: যখন আমাদের ব্লগে অন্যদের কোন ওয়েবসাইট থেকে আশা লিংককে “rel=nofollow ট্যাগ ব্যবহার করা না হয়, তখন সেই লিংক গুলি do- follow লিংক। এবং এই ধরণের লিংকের মাধ্যমে গুগল তার লিংক জুস পাস করে থাকে। তাই, এই ধরণের ব্যাকলিংক ওয়েবসাইটের জন্য অনেক কার্যকরী।

আশাকরি এখন আপনারা ব্যাকলিংক এর প্রকার সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। চলুন এখন আমরা “কিভাবে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করবো“ তা জেনে নেই।

কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়? (How To Create Back-links)

ব্যাকলিং তৈরি করার ( Create Backlinks )অনেক নিয়ম রয়েছে। তবে, ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক বানানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু কিছু বিষয়ের ওপর লক্ষ রাখতে হবে।

যেমন, কোন লো-কোয়ালিটি এবং  low domain authority থাকা ওয়েবসাইট থেকে ব্যকলিংক না নেওয়া।

অবশ্যই পড়ুন, 

সব সময় ভালো কোয়ালিটি ও ভালো ডোমেইন অথরিটি থাকা ওয়েবসাইট থেকে  back-links নিতে হবে।

এবং একসাথে অনেকগুলো ব্যাকলিংক করা যাবে না। করলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে spam হিসেবে ধরে নিতে পারে।

ফলে, আপনার গুগল সার্চের ranking অনেক বেশি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার সাইটকে সরিয়ে দিতে পারে।

তাই, সবসময় ভালো এবং  High quality ডোমেইন অথরিটির ওয়েবসােইট থেকে ব্যাকলিংক তৈরি করে নিতে সচেষ্ট থাকুন।

আপনি আপনার ওয়েবসািইটের ডোমেইন অথরিটি চেক করতে পারেন এখানে- “Check website authority”.

নিরাপদে ৫ টি ব্যাকলিংক বানানোর নিয়ম- 

নিচের দেওয়া ৫টি ব্যাকলিংক তৈরি করার নিয়ম গুলোর মাধ্যমে আপনি নিরাপদে ব্যাকলিংক তৈরি করে নিতে পারেন।

১. Quora question & answer সাইট 

Quora এমন এক question & answer ওয়েবসাইট, যেখানে যে কেউ খুব সহজেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।

এবং, নিজের দেয়া উত্তরের সাথে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে দিতে পারবেন এবং আপনার ওয়েবসাইটের একটি ব্যাকলিংক তৈরি হয়ে যাবে।

Quora হচ্ছে অনেক high quality সম্পন্ন এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট । যার domain authority হলো ৯৩, যেটা অনেক বেশি।

এই Quora থেকে নিজের ওয়েবসাইটে ব্যাকলিংক পাওয়াটা অনেক বেশি লাভজনক হয়ে থাকে।

আ পনার আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন সেখানে (quora) তে খুজুন, এবং সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনার আর্টিকেলের (URL link) লিংক দিয়ে দিন। 

ব্যাস কোরাতে আপনার একটি ব্যাকলিংক তৈরি হয়ে গেলো।

২. Guest posting (ব্যাকলিং তৈরির সেরা মাধ্যম)

Guest posting হলো একটি ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করার সবেচেয়ে সেরা, ভালো এবং লাভজনক মাধ্যম।

কেননা, guest posting এর মাধ্যমে আপনি contextual backlinks পেয়ে যাবেন এবং সেই লিংকের কোয়ালিটি অনেক সেরা।

Guest posting” মানে হলো, নিজের ব্লগের আর্টিকেলের সাথে জড়িত বিষয়ে অন্যদের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে সেটিকে publish করা।

এবং, অন্যদের ব্লগে আর্টিকেল লেখার সময় সেই আর্টিকেলের মধ্যে আপনার নিজের ব্লগের URL link দিয়ে দেওয়া।

এতে, আপনি সেই ব্লগের থেকে আপনার নিজের ব্লগের জন্য একটি ভালো কোয়ালিটির ব্যাকলিংক পাবেন।

এই প্রক্রিয়াটিকে আপনার খুব বেশি ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। মাসে, ২ থেকে ৩ টি high quality ব্লগে guest posting করলেই চলবে।

তবে,  যেই ব্লগে গেস্ট পোস্টিং করতে চাচ্ছেন, সেই ব্লগের যাতে DA এবং PA অধিক থাকে, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

সবকিছু ঠিক থাকলে আপনি ওয়েবসাইটের মালিকের সাথে যোগাযোগ করে, কথা বলে  এবং অনুমতি নিয়ে guest posting করতে পারেন।

আর যখন আর্টিকেল লিখবেন তখন আপনি আপনার আর্টিকেলের লিংকটি দিয়ে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন।

৩. Blog commenting 

Blog commenting ব্যবহার করে back-link তৈরি করা অনেক সহজ। এই মাধ্যম আজ প্রায় প্রত্যেক ব্লগার ব্যবহার করছেন।

এরজন্য আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এর আর্টিকেলের বিষয়ে সাথে সম্পর্কিত কোন ব্লগের আর্টিকেল খুঁজে বের করতে হবে।

তারপর, সেখানে আপনাকে কমেন্ট করতে হবে । এবং কমেন্ট করার সময় সেই কমেন্ট আপনার আর্টিকেলের (URL Address) লিংক যোগ করে দিয়ে সাবমিট করুন। 

অনেক ব্লগের ক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করার জন্য ওয়েবসাইটের এড্রেস দিতে বলে। তাই সেখানে আপনার ব্লগের এড্রেস দিয়ে দিন।

যখন, সেই কমেন্ট আর্টিকেলের কমেন্ট সেকশনে দেখাবে, তখন আপনি সেই ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক পেয়ে থাকবেন।

এভাবে বিভিন্ন ব্লগের বা ওয়েবসাইটের আর্টিকেলে কমেন্ট করেও আপনি ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন।

তবে মনে রাখতে হবে, আপনার আর্টিকেলের সাথে জড়িত অন্য ওয়েবসাইটের আর্টিকেলগুলোতেই শুধু কমেন্ট করবেন। এবং কমেন্ট করার সময় হাই কোয়ালিটি এবং ভালো ওয়েবসাইট দেখে কমেন্ট করবেন।

৪. Directory submission সাইট

এই পদ্ধতিতে ব্যাকলিংক করতে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের URL address বিভিন্ন web directory website গুলিতে জমা করতে হয়।

Web directory websites গুলিতে, বিভিন্ন রকমের হাজার হাজার ওয়েবসাইটের তালিকা রয়েছে। বিভিন্ন category হিসেবে আলাদা আলাদা ওয়েবসাইটের link এবং details দেয়া রয়েছে।

তাই এইসব web directory গুলি থেকে আশা ব্যাকলিংক ভালো কোয়ালিটির হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।

কিন্তু আপনি যদি কিছ ভালো web directory যেগুলো স্প্যম মুক্ত, কোয়ালিটি অনেক ভালো এবং ডিএ অনেক বেশি, তাহলে এখানে হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন।

কিছু ভালো এবং high quality web directory সাইট-

  • Best Of The Web
  • AboutUs
  • Blogarama
  • Indiblogger
  • Blogadda

৫. Social networking site প্রোফাইল

বিশ্বের সবেচেয়ে জনপ্রিয়, এবং ব্যবহারের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে, Social networking site গুলো।

আর এই মাধ্যমটি ব্যবহার করেও অনেক ভালো কোয়ালিটির ব্যাকলিংক পাওয়া যায় এবং এটি অনেক কার্যকরী। 

কেননা, প্রত্যেক social media website গুলিতে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দেয়ার একটি অপশন দেওয়া রয়েছে।

তাছাড়া, বিভিন্ন social networking sites গুলোতে প্রোফাইল তৈরি করার সময় আপনাকে আপনার নিজের বিষয়ে কিছু লিখতে বলা হয়ে থাকে (about or bio)।

নিজের bio বা about me section টিতেও আপনি আপনার নিজের ব্লগের URL link দিয়ে খুব সহজেই backlink বানাতে পারেন।

তাই, বিভিন্ন social media sites যেমন YouTube, Facebook বা Twitter ইত্যাদিতে গিয়ে আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করে নিতে হবে।

এরপর আপনার বানানো প্রোফাইলে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক দেন, তখন সেখান থেকেও আপনি একটি ব্যাকলিংক পেয়ে যাাবেন। 

আজকের শেষ কথা,

ব্যাকলিংক কি ? কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় (create backlink), (What Is Backlink) এবং কিভাবে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করবেন ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন।

আর্টিকেল সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment