ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে- বিস্তারিত জানুন

ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে-  ইন্টারনেট হলো এমন একটি বৃহৎ জাল বা নেটওয়ার্ক, যা পৃথিবীর সকল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সংযোজিত থাকে। এই নেটওয়ার্কে কম্পিউটার একে অপরের সাথে ইন্টারকানেক্টেড হয়ে থাকে এবং তার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ডিভাইসগুলি পরস্পরে লিংক অথবা কানেক্ট হয়। এই কাজের জন্য এই নেটওয়ার্কে ‘ইন্টারনেট প্রোটোকল সুইট (TCP/IP)’ ব্যবহার করা হয়।

আপনি যে “ইন্টারনেটের বিষয়ে” আমার এই আর্টিকেলটি পড়ছেন, সেটা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়েছেন। এটি যেকোনো মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্ভব।

আপনার অনলাইন ওয়েবসাইটের সাথে কানেক্ট বা লিংক হওয়ার জন্য, আপনার ডিভাইসের ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি প্রয়োজন। আমরা সাধারণত এটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট বলে পরিচিত।

আজকে, আমরা প্রায় সব ধরনের কাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করি। এটি আমাদের জীবনে অবিভাজ্য একটি অংশ হিসেবে পরিচিত।

আজ ইন্টারনেট সর্বত্র প্রাপ্য। লোকেদের ঘরে থেকে অফিসে, বিভিন্ন কার্যালয়ে এবং মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সহজেই উপলব্ধ।

এই কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে সংযুক্ত বা কানেক্ট হয়ে থাকতে পারি। বর্তমানে, এর ব্যবহার ব্যতিক্রমশীল হয়েছে এবং এর ছারাই বাড়ছে।

ইন্টারনেট কাকে বলে এর অর্থ সম্পর্কে সবটা আপনাকে বলবো। তবে, এটি এখন প্রায় একটি জীবনযাপনের অংশ হিসেবে পরিচিত। এটি ছাড়া, আজকাল প্রায় কোনও কাজ সম্ভব হয় না।

এক নজরে দেখুন 👁‍🗨👁‍🗨

ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে-

ইন্টারনেট কি, ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেটের জনক কে,
ইন্টারনেট কি,

ইন্টারনেট মূলত একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক বা জাল যা পৃথিবীর অনেক কম্পিউটার ও ডিভাইসগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এটি সংযোগের মাধ্যমে আমরা অনলাইনে তথ্য অনুসন্ধান, তথ্য শেয়ার এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ সহজেই সম্পাদন করতে পারি।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, অনলাইন শিক্ষা, বাজার সম্পর্কে তথ্য, ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং, আলোচনা ও কমিউনিটি বিল্ডিং, অনলাইন বিতরণের সুবিধা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য এবং অনেক আরো কিছু করতে পারি।

ইন্টারনেট একটি বৃহৎ সংসাধনযোগ্য ডাটা নেটওয়ার্ক, যা বিভিন্ন ধরনের প্রোটোকলের উপর নির্ভর করে। এটি প্রধানত একাধিক কম্পিউটার ও ডিভাইসের মধ্যে তথ্য প্রেরণ এবং গ্রহণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ইন্টারনেটের কার্যকারিতা পুরোপুরি বিশ্বব্যাপী হয়েছে এবং এটি অপারেটিং সিস্টেম, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং অন্যান্য টেকনোলজি ও সেবার সাথে প্রাসঙ্গিক।

আরো জানুন, 

ইন্টারনেটের প্রধান লাভ এবং সুবিধা হলো অত্যাধুনিক তথ্য অ্যাক্সেস, প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান, যৌথ কাজের সুবিধা, অনলাইন বিপণন এবং বাজারপ্রভৃতি ক্ষেত্রে সুবিধা, বিভিন্ন জিনিসের ওয়েব পরিচালনা, এবং প্রত্যাশিত তথ্যের সংগ্রহ।

প্রায় সবকিছুর জন্য আমরা ইন্টারনেটের সাহায্য নেই, তাই বর্তমান আধুনিক যুগে ইন্টারনেটের অংশগ্রহণ ছাড়া অনেককিছু অসম্ভব।

ইন্টারনেট কি? (What Is Internet)

ইন্টারনেট হলো আধুনিক টেলিযোগাযোগের একটি নেটওয়ার্ক বা মাধ্যম যেটা telephone line, তার (cables), satellites, বেতার সংযোগ (wireless connections) ব্যবহার করে কম্পিউটার বা অন্য ডিভাইসগুলিকে World Wide Web (www) এর সাথে সংযুক্ত করে।

World Wide Web (www) হলো ইন্টারনেটে তথ্য গ্রহণের পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে, হাইপারটেক্সট লিংক (hypertext link) এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে থাকা বিভিন্ন ডকুমেন্ট (document) বা ফাইল একে একের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে।

যার ফলে, এই hypertext link এর ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজন হিসেবে, একটি ডকুমেন্ট বা তথ্যের থেকে আরেকটি ডকুমেন্ট বা তথ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন।

এবং, প্রয়োজন হিসেবে নিজের কম্পিউটারে সেই তথ্য বা ডকুমেন্ট গুলি প্রাপ্ত করতে পারেন।

আজ, সব ধরণের কম্পিউটার ডিভাইস যেমন modern computer, laptop, smartphone, smart TV এবং আরো অন্য ডিভাইস ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট হতে পারে।

সহজ কথায় ইন্টারনেট কাকে বলে?

ইন্টারনেট হলো এমন একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যেখানে বিশ্বের সব থেকে বড় এবং ব্যস্ত কম্পিউটারগুলি একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়।

যখন আমরা আমাদের মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হই, তখন আমরা একটি বিশাল জালের অংশ হই এবং এটিকে “গ্লোবাল নেটওয়ার্ক” বলা হয়। এই গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সাথে যেকোনো কম্পিউটারে থাকা যেকোনো তথ্য আমরা প্রাপ্ত করতে পারি।

আসলে, একটি ডিভাইসের মাধ্যমে, এই গ্লোবাল নেটওয়ার্কে সংযোগ হইয়ে, বিশ্বের অন্যান্য কম্পিউটারে থাকা বিভিন্ন তথ্য, ফাইল বা ডকুমেন্ট গ্রহণ করার জন্য ব্যবহার করা কম্পিউটার নেটওয়ার্কটি হলো ইন্টারনেট।

তাহলে, ইন্টারনেট বলতে বুঝায় যে, বিশ্বের সব কম্পিউটার একে অপরের সাথে সংযুক্ত এবং তাদের মধ্যে তথ্য প্রেরণের জন্য একটি বিশাল নেটওয়ার্ক।

ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?

ইন্টারনেটের কাজ করার উপায় হলো সেই বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইস গুলির সংযোগ স্থাপন করা।

আমরা ইন্টারনেটে সাধারণত একটি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী বা আইএসপি (ISP) থেকে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য একটি সাবস্ক্রিপশন সংশ্লিষ্ট ডিভাইস বা রাউটার পেতে পারি।

এই ডিভাইস পৃথিবীর একটি কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কে সংযোগ করা হয় যা আমাদের কম্পিউটার বা অন্য ডিভাইস কে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে। এরপরে, আমরা ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীর মাধ্যমে অনুমোদিত হয়ে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হই।

সাধারণত, আমরা একটি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী থেকে একটি আইপি (IP) ঠিকানা এবং একটি পাসওয়ার্ড পেয়ে থাকি। এই তথ্য ব্যবহার করে আমরা সংযোগ স্থাপন করি এবং ইন্টারনেটে প্রবেশ করি।

ইন্টারনেটের সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য তাকে তার গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সাথে তার তার (তার) বা বেতার (ওয়ায়ারলেস) যেকোনো একটির মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতে হবে।

এবং তারপর, গ্লোবাল নেটওয়ার্কে জড়িত থাকা বিভিন্ন কম্পিউটারের সাথে আমাদের কম্পিউটার “রাউটার” এবং “সার্ভার” এর মাধ্যমে সংযোগ হয়ে, বিভিন্ন ডেটা এবং তথ্য সংগ্রহ করে নেয়। এভাবেই কাজ করে ইন্টারনেট।

ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য নিম্নলিখিত ৩ টি জিনিস প্রয়োজন:

১. একটি ডিভাইস: ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আপনাকে একটি ডিভাইস প্রয়োজন যেখান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার বা চালু করা যাবে, যেমন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, স্মার্ট টিভি ইত্যাদি।

২. ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী (ISP): আপনার ডিভাইসের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ করতে আপনি একটি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী অথবা আইএসপি থেকে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করতে হবে।

৩. ওয়েব ব্রাউজার বা অ্যাপ্লিকেশন: ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে আপনার একটি ওয়েব ব্রাউজার বা অ্যাপ্লিকেশন প্রয়োজন, যেমন Google Chrome, Mozilla Firefox, Microsoft Edge, Safari ইত্যাদি।

১. একটি ডিভাইস:

ইন্টারনেট কাজ করার জন্য প্রথমেই হবে একটি ডিভাইসের প্রয়োজন। সেই ডিভাইস হতে পারে একটি কম্পিউটার (Computer), ল্যাপটপ (Laptop), স্মার্টফোন (Smartphone) বা ট্যাবলেট (Tablet)। এখন সময়ে বিভিন্ন স্মার্ট টিভি বিক্রি হচ্ছে, যেগুলিতেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।

তারপরে একটি ইন্টারনেট কানেকশনের প্রয়োজন হবে।

২. ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী (ISP):

ইন্টারনেট কানেকশন (Internet connection) নেয়ার পর আমরা আমাদের ডিভাইস বা কম্পিউটারকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে, গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সেই বিশাল জালের সাথে কানেক্ট করতে পারি।

আমরা অনেক সহজেই, আমাদের পাশে থাকা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানকারী (ISP) গুলির থেকে ইন্টারনেট সেবা নিতে পারি। Airtel, Vodafone, Idea বা BSNL এই কোম্পানি গুলি আমাদের টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের সাথে সাথে ইন্টারনেট সেবা ও প্রদান করে।

তাই, এগুলিও একটি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী বা ISP।

ISP গুলির থেকে ইন্টারনেট সেবা নিয়ে আমরা তারপর তার (তারা) বা বেতার (ওয়াইরেলেস) যেকোনো মাধ্যমে নিজেদের কম্পিউটারে ইন্টারনেট সেবা সংযুক্ত করে নিতে পারি।

ইন্টারনেট সংযোগ পেলে সেই অবস্থাটাকে “অনলাইন” বলা হয়।

৩. ওয়েব ব্রাউজার বা অ্যাপ্লিকেশন:

মনে রাখবেন, যেকোনো ডিভাইসে, ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আপনার একটি ওয়েব ব্রাউজার (web browser) বা অন্য কোনো অ্যাপ্লিকেশনের (application) প্রয়োজন হবে।

ওয়েব ব্রাউজার এমন একটি সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন, যা আপনাকে আপনার কম্পিউটার বা ব্যবহার করা ডিভাইস থেকে ইন্টারনেটের সেই নেটওয়ার্কের জালের সাথে সংযুক্ত হতে দেয় যাকে আমরা “গ্লোবাল নেটওয়ার্ক” বলি।

তারপরে ডোমেইন (Domain), আইপি (IP) এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য কম্পিউটার থেকে তথ্য, ফাইল বা ডকুমেন্ট দেখতে বা গ্রহণ করতে পারি।

আরো পড়ুন, 

মনে রাখবেন, আধুনিক ইন্টারনেট সেবার দ্বারা আমরা অন্য অনেক কাজ করতে পারি। যেমন, অনলাইনে ভিডিও কল (video call), অনলাইনে চ্যাটিং (online chatting), ফটো বা ভিডিও শেয়ার করা, ভিডিও দেখা আরও অনেক।

এবং, ইন্টারনেটের এই আলাদা আলাদা অনলাইন সেবা ব্যবহার করার জন্য আপনার কিছু আলাদা আলাদা অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যারের প্রয়োজন হতে পারে।

কেবল, ওয়েব ব্রাউজার দিয়েই সবটা সম্ভব না।

তাহলে, ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, এবং এই বিষয়ে হয়তো এতক্ষণে আপনি ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন।

ইন্টারনেটের ইতিহাস-

ইন্টারনেটের আবিষ্কার করা খুঁজে বের করা ছিল সহজ কাজ নয়। এটি আসলে একটি প্রযুক্তিগত অদলবদলের ফলাফল ছিল। এটি প্রায় এক দশক ধরে বের করা হয়নি, এবং এটির উদ্ভব জনপ্রিয় নয় ছিল। এটি খোঁজার জন্য অনেক কম্পিউটার প্রোগ্রামার, বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীর প্রচেষ্টা প্রয়োজন ছিল।

আমেরিকার একটি এজেন্সি, ARPANET, স্থাপনা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। এই এজেন্সির কাজ হতো একটি কম্পিউটার কে অন্য একটি কম্পিউটারের সাথে সংযোগ বা কানেক্ট করা।

পরে, ১৯৮০ সালের পরে এই প্রযুক্তিতে নামের পরিবর্তন ঘটে এবং এটিকে “ইন্টারনেট” বলা হয়ে আসে।

১৯৮৩ সালের ১ তারিখে ইন্টারনেটের আরম্ভ হয়েছিল। ইন্টারনেটের প্রারম্ভিক সময়ে এটি কেবল “Network of networks” হিসেবে পরিচিত ছিল, তবে আজকের আধুনিক সমাজে এর নাম “ইন্টারনেট” হিসেবে পরিচিত।

কিন্তু, আগেই অনলাইনের দুনিয়া এতো ভাবে স্বীকার করা হতো না। কিন্তু, ১৯৯০ সালে “কম্পিউটার বৈজ্ঞানিক টিম বার্নার্স-লি” তার আবিষ্কার করেছিলেন বিশ্ব ওয়াইড ওয়েব (www), যা লোকদের জন্য এই ইন্টারনেট অনেক কাজের, মজার এবং স্বীকার করার যোগ্য হয়ে দাঁড়ালো।

ইন্টারনেটের মালিক কে?

ইন্টারনেটের উদ্ভাবনের সম্পর্কে একটি সোজা উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ এটি একটি সিস্টেমের ফলাফল যা অনেকের যোগাযোগের ফলে উদ্ভূত হয়েছে।

ARPANET নামের এজেন্সিতে অনেক গবেষক, প্রোগ্রামার, এবং প্রকৌশলীরা কাজ করেছিলেন, তবে ইন্টারনেটের উদ্ভাবনের জন্যে তাদের অবদানও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সাধারণত, ইন্টারনেটের উদ্ভব সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য অবদানকারী হিসেবে চিহ্নিত হয় ARPANET এর গবেষকদের।

ইন্টারনেটের সম্পর্কে মনুষ্যের মধ্যে সবচেয়ে জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হলো “TCP/IP প্রোটোকল”। এই “TCP/IP PROTOCOL” টি উদ্ভাবন করেছিলেন Vincent Cerf এবং Robert Kahn।

এই প্রোটোকলের মাধ্যমে তথ্য ও ডেটা পাঠানো হয় ইন্টারনেটে এবং এর কাজের নির্দেশাবলী নির্ধারিত হয়।

ইন্টারনেট এর ব্যবহার-

আজ ২০২৪ এ, ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং কাজের কোনো সীমা নেই। প্রত্যেকটি কাজের জন্য আমরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার করছি।

অনলাইনে ওয়েবসাইটে যেতে থেকে ডেটা, তথ্য বা ডকুমেন্ট প্রাপ্তি, লাইভ ভিডিও কল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিভিশন দেখা, দেশ বিদেশের লোকেরা সাথে কথা বলা বা মেসেজ পাঠানো, এবং ঘরে বসেই শিক্ষা প্রাপ্তি – সব কিছু ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্ভব।

আজ, আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রায় সব ধরণের তথ্য এবং জ্ঞান অনুসন্ধান করতে পারি এবং এর মাধ্যমে নিমিষে জ্ঞান অর্জন করতে পারি যা আগে অধিকাংশ মানুষ ধারণা করতেন না।

ইন্টারনেট এর সঠিক ব্যবহার, আমাদের জীবন অনেক সহজ এবং সোজা করে দিতে পারে।

তো, বন্ধুরা চলুন, এখন আমরা ইন্টারনেটের কিছু ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই যেগুলি বর্তমান সময়ে অনেক প্রচলিত এবং গুরুত্বপূর্ণ।

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা গুলো কি কি? 

নিচে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা সমূহ হলো-

অনলাইন শপিং:

কিছু বছর আগে, এই বিষয়ে কোনো রকমের ধারণা কারো মনে ছিল না। কিন্তু আজ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন শপিং এক ধরণের প্রচলিত হয়ে উঠেছে।

ভাবুন তো, আপনি ঘরে বসেই ইন্টারনেটের ব্যবহার করে যা যা কিনতে চান সেগুলি মোবাইলেই দেখে অর্ডার করছেন।

এবং, আপনার অর্ডার করা জিনিস আপনার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। আধুনিক ইন্টারনেট প্রযুক্তির এক ধরণের উপহার বললে ভুল হবে না।

তথ্য খোঁজা: 

আজকাল লোকরা অনলাইনে অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছেন বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে। আমি ইতিমধ্যে আলাপ করেছি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা দেশ বা বিদেশের যেকোনো তথ্য সহজেই পেয়ে যেতে পারি। ইন্টারনেট আপনার কাছে থাকলে, আপনি সেকেন্ডের মধ্যেই যেকোনো তথ্য পেয়ে যেতে পারবেন। 

ইলেক্ট্রনিক মেইল (Email):

ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা ইমেইল বা ইলেকট্রনিক মেইল পাঠাতে পারি। ইমেইল অনলাইন যোগাযোগের একটি অনেক বিখ্যাত মাধ্যম। আজ ৮০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা, সহজ এবং দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইমেইল বা ইলেকট্রনিক মেইল সেবা ব্যবহার করেন।

ফাইল ডাউনলো করা:  

আমরা অনেক সহজে বিভিন্ন সার্ভার বা ওয়েবসাইট থেকে ফাইল, ভিডিও, গান, ছবি, সফটওয়্যার, অথবা অন্যান্য ডাউনলোড করে নিতে পারি। এভাবে, যেকোনো ফাইল আমরা ঘরে বসেই অনেক সহজে পেতে পারি।

শিক্ষা বিষয়ক সুবিধা:  

আজকে ইন্টারনেটে আপনি যেকোনো বিষয়ে জানতে বা শেখাতে চাইলে চিন্তা করবেন না। A থেকে Z পর্যন্ত সব জিনিস আপনি শেখে নিতে পারবেন। ইন্টারনেটে সমস্ত তথ্য আপনি পাবেন।

যোগাযোগ করার সেরা মাধ্যম:

ইন্টারনেটের বেশি ব্যবহারে আমরা একে অপরের সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করি। এর মাধ্যমে, আমরা দেশের অথবা বিদেশের কোনো স্থান থেকে আমাদের পরিবারের প্রিয়জনদের সাথে অনেক সহজে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারি।

এটি ভিডিও কল, সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাটিং, ইমেইল বা ভয়েস কল ইত্যাদি যেকোনো মাধ্যমে করা যেতে পারে।

বিনোদনের জন্য:

আজ ৫০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা মুখোমুখি নেটের উপর নিজেদের entertainment এবং মনোরঞ্জনের জন্য সেই স্থান ব্যবহার করছেন। এবং, এই মডার্ন মনোরঞ্জন টেকনোলজির সামনে অন্য কোনো মাধ্যম আমাদের সন্তুষ্টি দেতে পারে না।

আজ, সিনেমা দেখা, গান শুনা, সিরিয়াল দেখা, সবটা আমাদের হাতের মুঠোয় রয়েছে। যেকোনো কিছু আপনি চান, তা পেতে আপনার নিজের মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেটে সার্চ করলেই পেতে পারবেন।

আপনি যদি YouTube এর বিষয়ে ধারণা রাখেন, তাহলে সম্ভবত আপনি ধারণা করেছেন যে, আমি কী বলতে চাচ্ছি।

বর্তমানের ছেলে মেয়েরা টেলিভিশন (TV) বা ডিভিডি প্লেয়ারের দিকে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। এটার পেছনের কারণ হল, তাদের জন্য ইন্টারনেটের সুবিধা আছে, যায় তাদের অন্য কোনো বিনোদনের মাধ্যমে প্রয়োজন করে না।

ঘরে বসেই অনলাইন ইনকাম: 

বর্তমানে ইন্টারনেটের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হলো অনলাইনে টাকা উপার্জন।

এখনকার দিনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে অনেকেই টাকা উপার্জন করছেন, যেমন YouTube চ্যানেল, ব্লগিং, ফ্রিল্যান্সিং এবং অন্যান্য বিভিন্ন মাধ্যমে।

তাই, ইন্টারনেটের এমন লাভজনক ব্যবহারের সম্পর্কে আমরা কখনোই ভাবা না থাকলেও এখনে তার গুরুত্ব অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে ইন্টারনেটকে নিজের আয়ের একটি প্রধান উপার্জন মাধ্যম হিসাবে গণ্য করেছেন।

হয়তো প্রারম্ভিকভাবে আপনি ইন্টারনেটের সম্পর্কে এমন অনেক জিনিস জানতেন না, কিন্তুু আজকের আর্টিকেলের সাহায্যে আমি আপনাকে কিছু জানাতে পেরেছি।

ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা সমূহ হলো-

  1. বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হওয়া যা তরুণ সমাজের শিক্ষার জন্য ভালো নয় এবং তারা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি পাচ্ছে।
  2. তরুণরা অনলাইনে বিভিন্ন গেম খেলার আগ্রহ দেখায় যা তাদের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  3. অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্য প্রদানের ফলে মানুষের ঠকানো হচ্ছে।
  4. সাইবার হামলা বৃদ্ধির কারণে ইন্টারনেটের সুরক্ষা বৃদ্ধি প্রয়োজন।

ইন্টারনেট আসক্তি কি?

বর্তমানে ইন্টারনেটের আসক্তি একটি বড় সমস্যা হিসেবে উঠেছে যা সামাজিক ও মানসিক সমস্যার মুখে অস্তিত্ব পাচ্ছে।

এই ধরণের আসক্তি কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন না, কোনো কাজের প্রতি মন থাকে না, এবং তারা কেবল নিজেদের মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের অভ্যাস অর্জন করেছেন।

এই ধরণের আসক্তিতে অন্তর্ভুক্ত থাকছে, সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যধিক ব্যবহার, অনলাইন গেমিং, অথবা বাধ্যতামূলক ইন্টারনেট ব্রাউজিং।

এছাড়াও, কারণ বা প্রয়োজন ছাড়া YouTube এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও দেখা বা খোঁজা আসক্তির কারণ হতে পারে।

এই ধরণের আসক্তি ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কাজ, এবং দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ইন্টারনেট ব্যবহার অবশ্যই করবেন, এটি আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা উপভোগ করার অধিকার আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে, কিন্তু ইন্টারনেটের ব্যবহার প্রয়োজন ছাড়া অতিমাত্রায় করা উচিৎ নয়।

কারণ, একবার ইন্টারনেট আসক্তিতে পরিণত হলে সত্যিই আপনি বিপদে পড়তে পারেন।

ইন্টারনেটের ব্যাপারে জানাটা কেন জরুরি? 

বর্তমান দিনে, সবচেয়ে বেশি পরিমাণে জ্ঞান এবং তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমেই পাওয়া যেতে পারে। এবং, সব ধরণের মানুষ নতুন নতুন জিনিসের বিষয়ে জানার অনেক ইচ্ছুক থাকে।

তাছাড়া, অনলাইনে ভিডিও বা আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা যেকোনো বিষয়ে শিখে নিতে পারি এবং নিজের দক্ষতা এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি।

আজ, বেশির ভাগ লোক ইন্টারনেট থেকে প্রতিদিন নতুন কিছু শিখে সেগুলি নিজের জীবনে প্রয়োগ করছেন। অনেকে আজ ইন্টারনেট থেকে কিছু নতুন শিখে সফল হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

তাছাড়া, আজকাল ইন্টারনেট যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। তাই, আপনি যদি ইন্টারনেটের বিষয়ে জ্ঞান না রাখেন, তাহলে অনেক পিছিয়ে থাকবেন এবং এতে আপনার ক্ষতি হতে পারে। সময়ে, এই যোগাযোগের মাধ্যম আপনার অনেক কাজে লাগতে পারে।

আজকাল অফিসের কাজেও ইন্টারনেট অধিক পরিমানে ব্যবহার করা হয়। তাই, এই বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে আপনার চাকরি পেতেও অসুবিধে হতে পারে।

অবশ্যই পড়ুন, 

প্রশ্ন উত্তর: 

#ইন্টারনেট এর আবিষ্কারক কে?

ইন্টারনেট এর আবিস্কারক বা জনক বলা হয় Vinton Gray Cerf কে।

#ইন্টারনেট কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা www একটি উদ্ভাবন ছিল যা যুগান্তকারী একটি ঘটনা ছিল এবং এটি বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবং মানুষের বর্তমান জীবনধারায় একটি প্রধান পরিবর্তন আনে। ব্রিটেনের একটি তরুণ কম্পিউটার বিজ্ঞানী টিম, টিম বার্নাস-লি, ১৯৮৯ সালে এই ইতিহাস সৃষ্টিকারী জগতকে তৈরি করেন।

#ইন্টারনেট এর পূর্ণরূপ কি?

পরিভাষায় ইন্টারনেট হচ্ছে ইন্টারকানেক্টেড নেট্ওয়ার্ক(interconnected network) এর সংক্ষিপ্ত রূপ Internet। এটা বিশেষ গেটওয়ে বা রাউটারের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো একে-অপরের সাথে সংযোগ করার মাধ্যমে গঠিত হয়। ইন্টারনেটকে প্রায়ই নেট বলা হয়ে থাকে।

#ইন্টারনেট কি এবং কিভাবে কাজ করে?

ইন্টারনেট হচ্ছে ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্কের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি বিশেষ গেটওয়ে বা রাউটারের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো একে-অপরের সাথে সংযোগ করার মাধ্যমে গঠিত হয়। ইন্টারনেটকে প্রায়ই নেট বলা হয়।

ইন্টারনেটের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রথমে নিজস্ব গ্লোবাল নেটওয়ার্কের তার কিংবা বেতার যেকোনো একটির মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতে হবে। এরপর গ্লোবাল নেটওয়ার্কে জড়িত বিভিন্ন কম্পিউটারের সাথে নিজেদের কম্পিউটার, রাউটার এবং সার্ভারের মাধ্যমে সংযোগ করতে হবে এবং বিভিন্ন ডাটা এবং তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এভাবেই ইন্টারনেট কাজ করে।

#ইন্টারনেট এর জনক কে?

ইন্টারনেটের জনক ভিন্টন গ্রে সার্ফ। Vinton Gray Cerf (জন্ম ২৩শে জুন, ১৯৪৩) একজন প্রথিতযশা আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যাকে আধুনিক ‘ইন্টারনেটের জনক’ বলা হয়ে থাকে। তার এই উপাধিটি তিনি আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী রবার্ট কানের সাথে ভাগ করেছেন। অবৈতনিক ডিগ্রির সাথে তার এই অবদানসমূহ স্বীকার এবং প্রশংসিত করা হয়েছে।

#বাংলাদেশের কত শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে?

এখন দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯০.৭৯ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, যা সংখ্যাগুলি প্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখে পৌঁছেছে। বিভিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররা এই বৃদ্ধির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল সেবার ব্যবহারের জনপ্রিয়তাকে কারণ হিসাবে দেখছেন।

আজকের শেষ কথা,

বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে ইন্টারনেট কি বা কাকে বলে,  ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা গুলো কি কি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করলাম। 

আশা করি আপনারা ইন্টারনেট সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। তারপরও যদি কারো ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

প্রযুক্তির নিত্যনতুন তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট বিনিময়ের সাথেই থাকুন বা নিয়মিত সাইটটি ভিজিট করুন।

আর্টিকেলটি যদি কারো বিন্দুমাত্র উপকারে আসে বা ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ

Leave a Comment